মহানবীকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ : গুঁড়িয়ে দেয়া হলো আফরিনদের বাড়ি, বাবাকে গ্রেফতার

মহানবীকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ : গুঁড়িয়ে দেয়া হলো আফরিনদের বাড়ি, বাবাকে গ্রেফতার

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:-কে নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দুই নেতার কটূক্তির প্রতিবাদ করায় উত্তর প্রদেশে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে ছাত্রনেত্রী আফরিন ফাতিমাদের বাড়ি। রোববার সন্ধায় বাড়িটি সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেয় সরকারি বাহিনী।

এর আগে আফরিনের বাবা জাভেদ মুহাম্মদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি ওয়েলফেয়ার পার্টির একজন নেতাও।

নবীজীকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে গত ১০ জুন প্রয়াগরাজে (সাবেক এলাহাবাদ) ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। এ ঘটনায় পাথর নিক্ষেপ, যানবাহনে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মামলা করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় অন্তত ৬০ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা জাভেদ মুহাম্মদসহ ১০ জনকে ওই মামলায় প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। এরপর শুক্রবার তাকে কারেলির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে।

সেদিনই তার স্ত্রী ও কন্যাকে আটক করা হয়। তবে পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

পুলিশ বলছে, জাভেদ মুহাম্মদই সেই শুক্রবারের বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন।

বাড়ি ভেঙ্গে দেয়ার ব্যাপারে ১১ জুন জাভেদ মুহাম্মদের পরিবারের কাছে একটি নোটিশ পাঠানো হয়। এরপর সেখানে থাকা বেশ ক’জন নারী সদস্যকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করে পুলিশ।

আফরিন ফাতিমার ভাই মুহাম্মদ উমর জাভেদ দ্য উইয়ারকে বলেন, পুলিশের একটি দল বাড়িতে এসে পরিবারের সদস্যদের ‘বুলডোজার অ্যাকশনের’ হুমকি দিয়ে যায়।

‘বিভিন্ন কর্মকর্তাদের একটি দল ১১ জুন রাতে আমাদের বাড়িতে আসে। তারা আমাদের হয়রানি করে এবং দ্রুত বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলে। আমাদের বলা হয় যে বাড়ি খালি করতে তারা আবার রাত ২টার দিকে আসবে,’ বলেন উমর জাভেদ।

উল্লেখ্য, ২২ বছর বয়সী আফরিন ফাতিমা ওয়েলফেয়ার পার্টির ছাত্র শাখা ফ্রাটারনিটি মুভমেন্টের (ভ্রাতৃত্ব আন্দোলনের) জাতীয় সাধারণ সম্পাদক।

হিজাব নিয়ে আন্দোলন করে আলোচনায় আসা আফরিন ২০২১ সালে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। সে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের একজন কাউন্সিলর ছিলেন। তিনি আলিগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতিও ছিলেন।

কর্নাটকে হিজাব নিষিদ্ধ, মুসলিম নারীবিদ্বেষী বুল্লি বাই অ্যাপ ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে তার ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য।

এলাহাবাদের মুসলিম তরুণীদের নিয়ে একটি কমিউনিটি গঠন করেন আফরিন ও তার বোন সুমাইয়া। মুসলিম মেয়েদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে তারা এমন উদ্যোগ নেন।

গেল অক্টোবরে ‘মুসলিমাহ এলাহাবাদ’ নামের একটি পাঠচক্রের আয়োজন করেন আফরিন ফাতেমা। এতে ৭০ জনের বেশি সদস্য রয়েছেন। ২০২০ সালে এলাহাবাদের খুলদাবাদের মনসুর আলী পার্কে একটি বিক্ষোভে বক্তৃতা করেন এই তরুণী। মুসলমানদের ভারত থেকে তাড়িয়ে দিতে করা নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ওই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়েছিল।

সূত্র : দ্য উইয়ার, দ্য কুইন্ট