মৌলভীবাজারে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে একই পরিবারের ৫ জন শেষ

মৌলভীবাজারে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে একই পরিবারের ৫ জন শেষ

ডেস্ক রিপোর্ট : মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলায় বসত ঘরের চালে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানসহ একই পরিবারের ৫ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।  

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ভোর ৫টার দিকে জুড়ি উপজেলার পূর্ব গোয়ালবাড়ি গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। 

মর্মান্তিক এ ঘটনায় আরও একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ২ টা থেকে এই এলাকায় অনেক ঝড়-তুফান হয়। এ সময় বিদ্যুৎ ছিল না। পেশায় ঠেলা চালক ফয়জুর রহমানের বসতঘরের  ছাউনির টিনের উপর হাই ভোল্টের পল্লী বিদ্যুতের একটি তার ছিড়ে পড়ে ছিল। সেহরীর পর সাড়ে ৪টার দিকে বিদ্যুৎ আসলে তাদের ঘরে শর্টসার্কিটে সবাই পুড়ে মারা যায়।

পরে স্থানীয়রা  খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস খবর দিলে একটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে ৫ জনের লাশ উদ্ধার করে।

নিহতরা হলেন স্বামী ফয়জুর রহমান (৫২), স্ত্রী শিরি বেগম (৪৫), মেয়ে সামিয়া বেগম (১৬), মেয়ে সাবিনা বেগম (১৩) ও ছেলে সায়েম মিয়া (৮)।

এদের মধ্যে মেয়ে সামিয়া বেগম নবম শ্রেণির ও সাবিনা বেগম সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। আহত সোনিয়া আক্তার (১০) আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পূর্ব গোয়ালবাড়ি সড়কের এক পাশে টিনের চালা ও বেড়ার তৈরি ঘরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকতেন ফয়জুর রহমান। তার ঘরের ওপর দিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের লাইন টানানো। নিজের জমি না থাকায় রহমত আলী নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির পতিত জমিতে ঘর তৈরি করেছিলেন ফয়জুর। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পূর্ব গোয়ালবাড়ি গ্রামে ফয়জুর রহমানের বাড়ির উঠানে পাঁচজনের লাশ রাখা। স্বজন ও প্রতিবেশীরা বুকফাটা আহাজারি করছেন। লাশ বহনের জন্য আনা হয়েছে পাঁচটি খাটিয়া। বাড়িতে লোকজনের ভিড়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আত্মীয়স্বজনেরাও ছুটে এসেছেন। লাশের পাশে বসে তারা কান্নাকাটি করছেন। ঘরের ভেতর বিদ্যুতের তার, মিটার পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। খাটের লেপ-তোশকও পুড়ে গেছে।

পল্লি বিদ্যুতের অবহেলা নিয়ে প্রশ্ন করলে মৌলভীবাজার পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম ইঞ্জিনিয়ার সোহেল রানা চৌধুরী একটি গণমাধ্যমকে জানান, ঝড়ে তার ছিঁড়ে গেছে। তাদের এই ঘর নির্মাণের সময় আমরা বাধা দিয়েছিলাম। কিন্তু নিহত পরিবারের ঘর বাঁধার মতো অন্য কোনো জমি ছিল না। তা ছাড়া ঘরের আশেপাশে আমরা একটি খুঁটি স্থাপন করতে গেলেও এলাকাবাসীর বাধা দেয়।  

জুড়ি থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।