র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ব্যাপারে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ব্যাপারে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। তবে শুরু থেকেই এর সমাধানের জন্য জোরালোভাবে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও ভবিষ্যতে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা যাতে না আসে, সে জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অন্যান্য সংস্থা একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করে যাওয়া মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লুর সঙ্গে র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ডেনাল্ড লু র‌্যাবের বর্তমান কার্যক্রমের বিশেষ প্রশংসা করেন।

আব্দুল মোমেন বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাস আইনি সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ব্যাপারে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

আওয়ামী লীগ দলীয় সদস্য আবুল কালাম আজাদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কতিপয় বিদেশি রাষ্ট্রদূত অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিডিয়ায় বক্তব্য রাখেন- এটা সত্য। তাদেরকে এই ধরনের শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত রাখতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে গণমাধ্যমে মন্তব্য করা কূটনীতিকদের কাছে তাদের বক্তব্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি লক্ষ্য করা গেছে, কিছু বিদেশি রাষ্ট্রদূত দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে গণমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন, যা একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর যেকোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কূটনীতিকগণ ওই রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তর বা ব্যক্তিগণের সাথে সাক্ষাত করতে পারেন এবং তাদের পক্ষ থেকে যদি কোনো বিষয়ে বক্তব্য থাকে তা আলোচনা করতে পারেন।

সংরক্ষিত আসনের মমতা হেনা লাভলীর এক প্রশ্নের জবাবে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকদের নামসর্বস্ব বিভিন্ন সংস্থার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হওয়ার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না তা জানতে চান।

জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল বা বিতর্ক সৃষ্টি করে এমন বিষয় বা অনুষ্ঠান থেকে কূটনীতিকরা বিরত থাকবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে বিরোধীদল ও কিছু গণমাধ্যম অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তাদের বক্তব্য দিতে সময় সময় উৎসাহিত করে, যা অন্যান্য দেশে প্রচলিত নয়।

ভিয়েনা কনভেনশনের বিধান উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সরকার বিদেশি কোনো কূটনীতিককে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে বাধা দেবে না। তবে এসব অনুষ্ঠানে কূটনীতিকরা শিষ্টাচার বজায় রাখবেন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবেন- এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি।