সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

সাগরদিগীরপাড়ে গৃহবধূকে  হত্যার অভিযোগ বড়ভাইয়ের

সাগরদিগীরপাড়ে গৃহবধূকে  হত্যার অভিযোগ বড়ভাইয়ের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিলেট নগরীর সাগরদিগীরপাড় এলাকায় মারা যাওয়া গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার বড়ভাই সুনামগঞ্জ সদরের তেলিকোনা গ্রামের মৃত শরিফ আহমদ এর ছেলে তাইজুল হাসান জুনেদ। একই সঙ্গে এই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের গড়িমসির অভিযোগ করে আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও  দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। গতকাল সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন। 

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমরা দুই ভাই এক বোন। বর্তমানে আমারা নগরীর সুবিদ বাজার ফাজিলচিশত এলাকায় বসবাস করি। আমার একমাত্র ছোট বোনকে গত ২৪ এপ্রিল নগরীর সাগরদিগীরপাড় ৬০ নম্বর রেজিয়া ভবনের টিনশেড রুমে সুবিদবাজার হাজীপাড়া এলাকার রইছ মিয়ার পুত্র সোবহান আহমদ মিলন তার সহযোগীদের নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। পরে এটিকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করতে থাকে।

পেশায় রাজমিস্ত্রি তাইজুল হাসান জুনেদ বলেন, আমার বোনের এর আগে একটি বিয়ে হয় সুনামগঞ্জের বাসিন্দা বর্তমানে নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকায় বসবাসকারী সাদ্দাম হোসেনের সাথে। তাদের ঘরে একটি শিশু সন্তানও রয়েছে। এরই মাঝে তাদের বাসায় যাতায়াতের সুবাদে এসএমপির এয়ারপোর্ট থানার সুবিদবাজার হাজীপাড়ার রইছ মিয়ার ছেলে সোবহান আহমদ মিলনের পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে গোপনে আমার বোনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে মিলন। পরে লোভলালসা দেখিয়ে ফুসলিয়ে আমার বোনকে তার স্বামীর অজান্তে বাসা থেকে বের করে নিয়ে আসে। রেজিষ্ট্রি বিয়ে না করে মৌখিকভাবে বিয়ে করে আমার বোন ও ভাগ্নিকে নিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। সর্বশেষ মিলন আমার বোনকে নিয়ে নগরীর সাগরদিগীরপাড় ৬০ নম্বর রেজিয়া ভবনের টিনশেড রুমে ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠে। আমার বোন তাকে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করতে চাপ দিলে মিলন আমার বোনকে নির্যাতন করতে থাকে। 
এই বাসায় গত ২৪ এপ্রিল মিলন ও তার সহযোগিরা একত্রিত হয়। সবাইকে পেয়ে আমার বোন আবারো কাবিনের জন্য মিলনকে চাপ দেয়। ওইদিন বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মিলন তার বন্ধু ইজদানীসহ অন্যদের নিয়ে আমার বোনকে গলায় গামছা পেচিয়ে হত্যা করে। পরে লাশ ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। আমার ৪ বছর বয়সী ভাগ্নি এই লোমহর্ষক ঘটনাটি দেখে এবং সে প্রায় ৪ ঘন্টা লাশের সাথে খেলা করে। আমার ভাগ্নির জবানবন্দী শুনলে অনেক কিছুই বের হয়ে আসবে। আমরা তার কথাগুলো রেকর্ড করে রেখেছি।
মামলা করার পর পুলিশ এ বিষয়ে “অসহযোগিতা করছে” জানিয়ে তিনি বলেন, “এ ঘটনায় মিলনকে প্রধান আসামী ও তার বন্ধু সুবিদবাজার লন্ডনী রোড ৪১ নম্বর বাসার ভাড়াটিয়া আলাউদ্দিনের পুত্র শেখ রওশন ইজদানী, সুবিদবাজার হাজীপাড়ার বাচ্চু মিয়ার পুত্র শুভ, সিরাজ মিয়ার পুত্র জুলহাস, বাচ্চু মিয়ার পুত্র ফেরদৌস ও রইছ মিয়ার পুত্র সুমনকে আসামী করে মামলা করা হয়। এখন পর্যন্ত কোন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়নি।” এ ব্যাপারে পুলিশের আইজি, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।