সিলেটে কমিউনিটি ভিত্তিক প্রসব পরবর্তি পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

সিলেটে কমিউনিটি ভিত্তিক প্রসব পরবর্তি পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশে প্রায় শতকরা ৫০ ভাগ নারীর প্রসব হয় বাড়িতেই। এতে একদিকে যেমন মা ও নবজাতকের জীবনের ঝুঁকি বাড়ে, তেমনি বাড়ে প্রজনন স্বাস্থ্যঝুঁকি। সেবাকেন্দ্রে প্রসব পরবর্তী সেবা হিসেবে মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবার সাথে সাথে আরো বেশ কিছু সেবা দেওয়া হয়, যেমন - প্রসব পরবর্তি পরিবার পরিকল্পনা সেবা। সন্তান জন্ম দেওয়ার পরপরই মা যেন আবার অপরিকল্পিতভাবে গর্ভধারণ করে না ফেলেন সেজন্য দেওয়া হয় এই সেবা। অথচ বাড়িতে প্রসব হচ্ছে এমন শতকরা ৫০ ভাগ নারী এই সেবা থেকে বঞ্চিত হন। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ইউএসএআইডি এর সুখী জীবন প্রকল্প বাংলাদেশ সরকারকে কমিউনিটি ভিত্তিক প্রসব পরবর্তি সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সহায়তা করছে।

পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনালের বিগত চার বছর এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে আসছে। এই কার্যক্রমের ফলে বিগত চার বছরে সিলেট বিভাগে প্রসব পরবর্তি পরিবার পরিকল্পনা সেবায় অর্জিত উন্নয়ন নিয়ে পর্যালোচনা করার জন্য শহরের হোটেল মেট্রো ইন্টারন্যাশনালে গতকাল (৬ মার্চ ২০২৩ রোজ সোমবার) ্#৩৯;অংশিদার অবহিতকরণ কর্মশালার আয়োজন্#৩৯; করে পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল। অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জনাব মোঃ কুতুব উদ্দিন, বিভাগীয় পরিচালক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, সিলেট। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাঃ শরিফুল হাসান, বিভাগীয় পরিচালক-স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিলেট। এই কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জ জেলার সকল উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
প্রকল্পের কোঅরডিনেটর পলি বেগমের উপস্থাপনায় এই কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডাঃ মিশাল চন্দ্র পাল, রিজিওনাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার, সুখী জীবন প্রকল্প। তিনি এই প্রকল্পের কার্যক্রমের ফলে প্রসব পরবর্তি পরিবার পরিকল্পনা সেবায় যে পরিবর্তন সংঘঠিত হয়েছে তা তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে উপস্থাপন করেন। উপস্থাপনায় দেখা যায় ইউএসএআইডি সুখী জীবন প্রকল্প কার্যক্রমের ফলে সিলেট বিভাগে ২০২০ সাল থেকে গর্ভবতী মায়েদের রেজিস্ট্রেশনের হার বেড়েছে ১৪ শতাংশ এবং বাড়িতে প্রসবের হার কমেছে অন্তত ২৮ শতাংশ। সেই সাথে, প্রসব পরবর্তি আপন বড়ির ব্যাবহার বেড়েছে ১৬ শতাংশ, ইনজেকশন ব্যবহারের হার বেড়েছে ২২ শতাংশ এবং ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহারের হার বেড়েছে ৪৭ শতাংশ। পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনালের বাস্তবায়নে ইউএসএআইডি সুখী জীবন প্রকল্পের আওতায় সিলেট বিভাগের মোট ৭১১ জন সেবাপ্রদানকারী প্রশিক্ষণ পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সুখী জীবন প্রকল্পের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর ও এফপি স্পেশালিস্ট ডাঃ শারমিন সুলতানা, এবং ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস ম্যানেজার ডাঃ ফাহমিনা খান। বক্তারা সুখী জীবন প্রকল্প এবং কমিউনিটি ভিত্তিক প্রসব পরবর্তি পরিবার পরিকল্পনা সেবার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন এবং এই কর্মসূচির প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব উপস্থাপন করেন।
উপস্থাপনার সহায়তায় এই ভিডিওটি ব্যবহার করা হয় -যঃঃঢ়ং://ুড়ঁঃঁ.নব/ধঋঙ৩ঐ০ক৬৫ব৪ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাঃ শরিফুল হাসান, বিভাগীয় পরিচালক- স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিলেট, দেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রাপ্তির হার এবং জরুরী স্বাস্থ্যসেবাসমূহের মান উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সেই সাথে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, সুখী জীবন প্রকল্পের এই চলমান কার্যক্রমের ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় প্রসব পরবর্তি পরিবার পরিকল্পনা সেবা নিশ্চিত হবে এবং হ্রাস পাবে মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যু জনিত ঝুঁকি। জনাব মোঃ কুতুব উদ্দিন, বিভাগীয় পরিচালক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। বিজ্ঞপ্তি