হালকা কথা বলে লাভ নেই, পদত্যাগ করুন: মির্জা ফখরুল

হালকা কথা বলে লাভ নেই, পদত্যাগ করুন: মির্জা ফখরুল

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
চায়ের নিমন্ত্রণ নয়, আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মেনে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

‘প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ঘেরাও করতে আসলে বাধা দেওয়া হবে না, চা খাওয়াব, কথা বলতে চাইলে শুনব'- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া জানান। 

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব) আয়োজিত ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অমানিশা: দুর্নীতি আর লুটপাটের খেসারত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে আগে বলতে হবে-কেয়ারটেকার সিস্টেম মেনে নিচ্ছি, ঘোষণা করুন কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা মেনে নেবেন। তাহলে চা খাওয়া যাবে অসুবিধা নেই। তা না করে এই সমস্ত হালকা কথা বলে লাভ নেই। আমাদের একটাই কথা- পদত্যাগ করুন, পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা দিন এবং একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।

বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে কারো কাছে কোথাও জবাব দিতে হয় না। শতকরা ৫১ ভাগ জ্বালানি আসে গ্যাস থেকে। সেই গ্যাসে উত্তোলনের ব্যবস্থা গত ১৫ বছর সরকার করেনি। তারা একটা জিনিসের দিকে গুরুত্ব দিয়েছে কি করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে পাচার করা যায়।

তিনি বলেন, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টে এই সরকার ইনডেমনিটি দিয়েছে। তাহলে কি করে আশা করতে পারেন- এ খাতে দুর্নীতি হবে না, বিদ্যুতে লুট হবে না। একটা খনার বচন আছে-‘রাজার দোষে রাজ্য নষ্ট, প্রজা পায় কষ্ট’। আজকে আমাদের যারা শাসন করছে শাসনকর্তা - তাদের দুর্নীতি, তাদের লুটপাট, তাদের অশিক্ষা, ব্যর্থতা সব মিলিয়ে আমাদের বাংলাদেশের জনগণের জীবনটা দুর্বিষহ করে ফেলেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা কষ্ট পাচ্ছে। অথচ সরকারের মুখের ভাষা কি, তারা সিঙ্গাপুর বানিয়ে দিচ্ছে, মালয়েশিয়া বানিয়ে দিচ্ছে, কানাডাও বানিয়ে দিতে চায়, সানফ্রান্সিসকো বানাতে চায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজ ৪০ থেকে ৪২ ভাগ দারিদ্র্যের হার, দুই বেলা খেতে পারছে না। আজকে বাংলাদেশের কয়েকটা জেলা কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সুনামগঞ্জ- এই জায়গাগুলোতে ২১ ভাগ লোক দুই বেলা খেতে পারে না। প্রবাসীদের রেমিট্যান্স কমে আসছে। চোখে সর্ষে ফুল দেখবেন, দেখা শুরু করেছেন। যার জন্য আবোল-তাবোল কথা বলতে শুরু করেছে সরকার।

বিদ্যুৎ সংকটে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং বেশি হওয়ার কারণে ফসলাদি উৎপাদন মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেন বিএনপি মহাসচিব।

অ্যাবের সহসভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে ও প্রকৌশলী কেএম আসাদুজ্জামান চুন্ন'র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হাছিন আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা মুইদ রুমি, আবদুস সালাম, আশরাফ উদ্দিন বকুল, জহিরুল ইসলাম, আ. সালাম, নিয়াজ উদ্দিন, বিপ্লব, প্রকৌশলী মাহবুব, সুমায়েল, মোতাহার হোসেন, আসিফ রচিসহ অ্যাবের সিনিয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।