৭০০ প্রকৌশলী আর ১৩ হাজার শ্রমিকের ঘামে তৈরি পদ্মা সেতু

৭০০ প্রকৌশলী আর ১৩ হাজার শ্রমিকের ঘামে তৈরি পদ্মা সেতু

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
বিরাট এক কর্মযজ্ঞের নাম পদ্মা সেতু। দেশি-বিদেশি সাতশ’ প্রকৌশলী আর ১৩ হাজার শ্রমিকের প্রায় সাত বছরের পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে পদ্মা সেতু। 

জার্মানি থেকে এসেছে হ্যামার, লুক্সেমবার্গ থেকে রেলের স্ট্রিংগার, যুক্তরাষ্ট্রের সান্তিয়াগো থেকে ভূমিকম্পরোধী বিয়ারিং; সেইসাথে অসংখ্য বিশেষজ্ঞের মেধা ও শ্রমে গড়ে উঠেছে এই সেতু।

১৯৯৮-১৯৯৯ সালে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সর্বপ্রথম পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। 

আর ২০০১ সালে জাপানিদের সহায়তায় সম্ভাব্যতা যাচাই হয়। ২০০১ সালের ৪ জুলাই মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর প্রথম ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরপর নানা প্রক্রিয়া আর চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর শুরু হয় পদ্মা সেতুর কাজ। আর ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ সাল থেকে থেকে শুরু হয় মূল সেতুর নির্মাণ কাজ। 

তারপর কেটে গেছে দুই হাজার ৩৪০ দিন। গেল দু’বছর মহামারী করোনার সময়টুকু বাদ দিলে  শীত, বর্ষা, রোদ, বৃষ্টি, ঝড়, বন্যা প্রকৃতির নিময়ে সবই এসেছে। 

কিন্তু একদিনের জন্যও থেমে থাকেনি পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ। যার নির্মাণ কাজে সরাসরি জড়িত ছিলেন বাংলাদেশ এবং চীনের ৭০০ প্রকৌশলী। 

দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এই সেতু নির্মাণের সঙ্গে সব মিলিয়ে চার হাজার প্রকৌশলী জড়িত ছিলেন। কাজ করেছেন বাংলাদেশের পাঁচ শতাধিক প্রকৌশলী। 

নিজেদের অভিজ্ঞতা আর সক্ষমতা দিয়ে আগামীতে দেশে নানা স্থাপনা নির্মাণে এই প্রকৌশলীরা বড় ভূমিকা রাখবেন বলে আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা।

প্রতিদিন গড়ে পদ্মার দুই পাড়ে কাজ করেছেন ১২ থেকে ১৩ হাজার শ্রমিক। তারপরই ধীর ধীরে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে পদ্মা সেতু। এই গর্বের সাথে জড়িয়ে আছে সব শ্রমিকের উদয়াস্ত পরিশ্রম। 

এতো কোটি মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সঙ্গে নিজের শ্রম ঘাম মিশে আছে এটাই এসব শ্রমজীবী মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় পাওয়া। 

পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম, জানিয়েছেন, নদীর প্রকৃতির কারণে কঠিন ছিলো পদ্মা সেতুর সব কাজ। পদে পদে ছিলো চ্যালেঞ্জ। সেখানে কারও অবদানই কম ছিলো না। 

এদিকে সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু একটি কোম্পানি হবে। এখানে সব সময়ই শ্রমিকরা কাজ করবে। 

সেতুর কাজ শেষ হলেও সব সময়ই এটির সংস্কার দরকার হবে। করতে হবে রক্ষণাবেক্ষণ। এজন্য সব সময়ই কাজ করবে শ্রমিকরা। 

কারণ আয়তন ও নির্মাণ ব্যয়ের দিক থেকে পদ্মা সেতু দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। এটাই হলো দেশের প্রথম দ্বিতল সেতু। ওপর তলায় চলবে মোটরযান; নিচের তলায় চলবে ট্রেন।