স্বাস্থ্য : হৃদস্প‌ন্দনের হার বেশি বা কম হওয়া যেসব রোগের লক্ষণ

স্বাস্থ্য : হৃদস্প‌ন্দনের হার বেশি বা কম হওয়া যেসব রোগের লক্ষণ

রয়েল ভিউ ডেস্ক :
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যান। কেবল যে বয়স্করা এই রোগে আক্রান্ত হন তা কিন্তু নয়, বর্তমানে অল্প বয়সিরাও এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে এক জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে হৃদস্প‌ন্দনের হার স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি মিনিটে ৭২। ব্যক্তি বিশেষে হৃদস্প‌ন্দনের হার প্রতি মিনিটে সর্বনিম্ন ৬০ বার থেকে সর্বোচ্চ ১০০ বারও হতে পারে। তবে যারা পেশাগত ভাবে খেলাধুলো কিংবা শরীরচর্চা করেন, তাদের হৃদস্প‌ন্দনের হার অপেক্ষাকৃত কম হয়। কিন্তু হৃদস্প‌ন্দনের হার বেশি বা কম হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়াই বিচক্ষণতার পরিচয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাভাবিকের তুলনায় কম বা বেশি হওয়া মোটেই ভালো লক্ষণ নয়। হৃদস্প‌ন্দনের হারের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বা হ্রাস একাধিক অসুস্থতার লক্ষণ হতে পারে। হৃদস্প‌ন্দনের হার মিনিটে ৬০ বারের থেকে কমে যাওয়াকে বিজ্ঞানে ব্রাডিকার্ডিয়া বলা হয়। আবার হৃদস্প‌ন্দনের হার ১০০ বারের থেকে বেড়ে গেলে তাকে বলে ট্যাকিকার্ডিয়া।

বিশেষজ্ঞদের মতে হৃদস্প‌ন্দনের হার কম হওয়ার পেছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। যেমন- 

>>  হৃদ্‌স্পন্দনের হার কমে যাওয়া হৃদরোগের অন্যতম লক্ষণ। হৃদযন্ত্রের যে অংশটি হৃদস্প‌ন্দনের উৎস, তার নাম সাইনো অ্যাট্রিয়াল নোড। এই সাইনো অ্যাট্রিয়াল নোড সঠিক ভাবে কাজ না করলে হৃদস্প‌ন্দনের হার কমে যেতে পারে।

>> টাইফয়েডের মতো কিছু রোগের ফলেও হৃদস্প‌ন্দনের হার কমে যায়।

>> থাইরয়েড গ্রন্থি সঠিক ভাবে কাজ না করলেও কমতে পারে হৃদস্প‌ন্দনের হার।

>> রক্তে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেড়ে গেলেও হৃদযন্ত্রে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আবার হৃদস্পন্দনের হার স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে গেলেও সেটি ডেকে আনতে পারে বিপদ। ফলে যে সব অসুখে হৃদস্প‌ন্দনের হার বাড়ার ঝুঁকি থাকে, সে সব সময়ে বেশি সতর্ক হতে হবে।

>> বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত যেকোনো ধরনের জ্বরে হৃদস্প‌ন্দনের হার বৃদ্ধি পায়।

>> সংবহনতন্ত্রের সমস্যা থাকলে বেড়ে যেতে পারে হৃদস্প‌ন্দনের হার।

>> রক্তাল্পতা ও হাঁপানির মতো সমস্যাও হৃদস্প‌ন্দনের হার বাড়িয়ে দিতে পারে।

>> কোভিডের পরেও বেশ কিছু রোগীর মধ্যে এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে।

হৃদস্প‌ন্দনের অস্বাভাবিক হার হৃদরোগের প্রাথমিক লক্ষণ। ক্লান্তি, ঝিমুনি, বুক ধরফর করা, শ্বাসকষ্ট-সবই হৃদরোগের লক্ষণ। তাই এই ধরনের সমস্যা উপেক্ষা করা একেবারেই অনুচিত। বর্তমানে হৃদস্পন্দন মাপার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ায় প্রয়োজন হয় না। দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত প্রযুক্তির মধ্যে দিয়েই এর পরিমাপ সম্ভব। কাজেই যদি এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, তবে অবিলম্বে নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ।