আকাশ ছোঁয়া দুর্নীতির মধ্যে দিয়ে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিচ্ছে সরকার : ফখরুল

আকাশ ছোঁয়া দুর্নীতির মধ্যে দিয়ে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিচ্ছে সরকার : ফখরুল
ফাইল ছবি

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ জনগণ ও দেশের অর্থনীতির ওপরে ভয়াবহ প্রভাব পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, সরকার যে ভয়াবহ দুর্নীতির মধ্যে দিয়ে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিচ্ছে তার আরেকটি প্রমাণ হঠাৎ করে মধ্য রাতে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি।

শনিবার (৬ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ভোলা জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলম হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রদল আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এমন মন্তব্য করেন তিনি। 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সরকার যে শুধু বিএনপির ওপরে আক্রমণ করেছে তা নয়, এই সরকার তার বেআইনি ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য যে দুর্নীতি শুরু করেছে, যে আকাশ ছোঁয়া দুর্নীতির মধ্যে দিয়ে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিচ্ছে তার আরেকটি প্রমাণ হচ্ছে শুক্রবার (৫ আগস্ট) মধ্যরাতে হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের দাম ৫০ ভাগেরও বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে। যে ডিজেলের দাম ছিল ৮০ টাকা, তার দাম করেছে ১১৪টাকা। অকটেনের দাম ছিল ৮৮টাকা তার দাম করেছে ১৩৫টাকা। ফলে আজ (৬ আগস্ট) রাস্তায় যানবাহন কমে গেছে। এটার ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়বে সারাদেশের অর্থনীতির ওপরে। দেশের সব মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এই জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে পরিবহণ ভাড়া, চাল, ডাল তেলের দাম আবার দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ হয়ে যাবে। মাঝখান থেকে আমাদের সাধারণ মানুষ যারা দিন আনে দিন খান, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এতদিন সরকার মিথ্যাচার করেছে। এখন রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণে সরকার আইএমএফ, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, এডিবির কাছ থেকে ডলার ঋণ নিচ্ছে। আইএমএফের ঋণের শর্ত খুব শক্ত। তারা বলেছে যেসব পণ্যে ভর্তুকি দিচ্ছ, সেসব বন্ধ করো। সেজন্য জ্বালানির দাম বাড়ানো হয়েছে। গতকাল বিপু সাহেব বললেন জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা বাড়ানো হতে পারে, যা সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এর দাম দেড়গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। আপনারা জানেন, বার বার বিদ্যুৎ, গ্যাস, তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে। তারমধ্যে আজ সকালে দেখলাম কাঁচা মরিচের দাম তিনশ টাকা। মানুষ এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আজকে ক্ষমতায় টিকে আছে শুধুমাত্র হত্যা, খুন, গুম এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে। গত ১৫ বছরে তারা আমাদের ছয় শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করেছে। সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। বিনা কারণে এই দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে অসুস্থ অবস্থায় অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। ভয়ভীতি হত্যার নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে এই সরকার টিকে আছে। আজকে আবদুর রহিম, নূরে আলমের রক্তদান আমাদের গণতান্ত্রিক লড়াইকে আরও শক্তিশালী করবে।

ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আবদুস সালাম, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাবেক ছাত্র নেতা ড. আসাদুজ্জামান রিপন, শামসুজ্জামান দুদু, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আজিজুল বারী হেলাল, কামরুজ্জামান রতন, নাজিম উদ্দিন আলম, এবিএম মোশারফ হোসেন, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, ফজলুর রহমান, ইকবাল হোসেন শ্যামল, মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, যুবদলের মোনায়েম মুন্না, ছাত্রদলের রাশেদ ইকবাল খান, রাকিবুল ইসলাম, আবু আফসার মোহাম্মদ ইয়াহিয়া প্রমুখ।