চামড়া নিয়ে বিপাকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

চামড়া নিয়ে বিপাকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
গরুর চামড়ার ন্যায্য দাম না পেয়ে মাথায় হাত মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের। লাখ টাকার গরুর চামড়ার দাম হাজার টাকাও দিচ্ছেন না পাইকাররা। বাধ্য হয়ে লোকসানে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের। কেউ কেউ চামড়া নিয়ে ঘুরছেন পাইকারদের দ্বারে দ্বারে। বোরবার (১০ জুলাই) ঈদের দিন সকাল থেকেই মহল্লার বাসা-বাড়ি থেকে চামড়া সংগ্রহ শুরু করেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

একেকটি চামড়া তারা কিনেছেন ৬০০ থেকে হাজার টাকার মধ্যে। তবে সেই চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে দাম পাচ্ছেন না মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় চামড়া নিয়ে আসা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, তারা মহল্লা থেকে একেকটি গরুর চামড়া কিনেছেন ৬০০ থেকে হাজার টাকায়। তাদের প্রত্যাশা ছিল প্রতি চামড়ার অন্তত ২০০ থেকে ৩০০ টাকা লাভ হবে। কিন্তু বিক্রি করতে গিয়ে চামড়া প্রতি দেড় থেকে দুইশো টাকা লোকসান হচ্ছে।

দুপুরের আগেই চামড়ার এমন দরপতন দেখে সতর্ক হয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। পাড়া-মহল্লা থেকে চামড়া কিনতে সঙ্গীদের নিষেধ করে দিয়েছেন তারা।
রাজধানীর মিরপুর এলাকার মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জানান, সকাল থেকে তিনি মাঝারি আকারের একেকটি চামড়া কিনেছেন ৬০০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে। বড় আকারের গরুর চামড়ায় দাম দিয়েছেন হাজার থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু বেলা ১১টায় যখন প্রথম লট চামড়া পাইকারদের কাছে বিক্রির জন্য পাঠান তখনই মাথায় হাত।

সাইফুল বলেন, ‘পাইকাররা মাঝারি সাইজের চামড়া ৬০০/৭০০ টাকা বলে। আর বড়গুলো বলে ৮০০/৯০০ টাকা। এর চাইতে আমাদের কেনা আরও বেশি। পরে চামড়া বিক্রি করি নাই। ফেরত নিয়া আসছি। নতুন করে চামড়া কিনতেছিও না।’

ঈদ সামনে রেখে সম্প্রতি কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। গরুর চামড়ার দাম গতবারের চেয়ে ৭ টাকা এবং খাসির ক্ষেত্রে ৩ টাকা বেড়েছে।

ট্যানারি ব্যবসায়ীদের এবার ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া কিনতে হবে ৪৭ থেকে ৫২ টাকায়, গত বছর এই দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।

ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম হবে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা, গতবছর যা ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা ছিল।

এছাড়া সারাদেশে লবণযুক্ত খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা, আর বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গতবছর খাসির চামড়ার দাম ছিল ১৫ থেকে ১৭ টাকা, আর বকরির চামড়া এবারের মত ১২ থেকে ১৪ টাকাই ছিল।

ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, বছরে বাংলাদেশ থেকে মোটামুটি ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ গরুর চামড়া, ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ছাগলের, ২ দশমিক ২৫ শতাংশ মহিষের এবং ১ দশমিক ২ শতাংশ ভেড়ার চামড়া।