ডিসেম্বর মাসজুড়ে ঢাকা দখলে রাখবে আওয়ামী লীগ

ডিসেম্বর মাসজুড়ে ঢাকা দখলে রাখবে আওয়ামী লীগ

রয়েল ভিউ ডেস্ক:
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের কর্মসূচি চূড়ান্ত করেছে। আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে পুরো ডিসেম্বর মাসজুড়ে ঢাকার রাজপথ আওয়ামী লীগ যেন দখলে রাখতে পারে সেভাবে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হচ্ছে। পহেলা ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ মাসব্যাপী বিজয় মাস উদযাপন করবে এবং ঢাকার পাড়ায়-মহল্লায় অলিতে-গলিতে নানারকম কর্মসূচি পালন করবে। আওয়ামী লীগের সবগুলো অঙ্গ সহযোগী সংগঠনকে ডিসেম্বর মাসে কর্মসূচি দেয়ার কথা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের পক্ষ থেকে একাধিক কর্মসূচি পালন করা হবে। আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন যে, তিন ধাপে আওয়ামী লীগ কর্মসূচি পালন করবে। প্রথমত, আওয়ামী লীগ প্রতিটি ওয়ার্ড পর্যায়ে বিজয়ের মাস উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের সমাবেশ এবং কর্মসূচি পালন করবে। এই ওয়ার্ড পর্যায়ের কর্মসূচি গুলো এমন ভাবে করা হবে যেন ওই ওয়ার্ডকে জাগ্ররণ তৈরি হয়। দ্বিতীয় ধাপের কর্মসূচি হবে অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলো বিজয়ের মাস থেকে ঘিরে নানা রকম কর্মসূচি পালন করবে। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, যুব মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠন প্রত্যেকেই ডিসেম্বর মাসে কোনো না কোনো কর্মসূচি ঢাকায় পালন করবে এবং এই কর্মসূচিগুলো ঘরোয়া হবে না, জনসভা আদলে অনুষ্ঠিত হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে যুব লীগের মহাসমাবেশ আওয়ামী লীগের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। এই ধারায় বিভিন্ন সংগঠনগুলোকে কর্মসূচি পালনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। সম্মেলন ছাড়াও ডিসেম্বর মাসে ছাত্রলীগ নানারকম কর্মসূচি পালন করবে। তৃতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ঢাকায় দুটি বড় ধরনের শোডাউন করবে বলে জানা গেছে। তবে এই দিন তারিখ গুলো এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলছেন, আগামী দু-একদিনের মধ্যে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যৌথসভা অনুষ্ঠিত হবে। সেই সভায় কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে। আর অন্যদিকে অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলো কর্মসূচি প্রণয়ন চূড়ান্ত করেছে এবং ঢাকায় কবে কোন সংগঠন কর্মসূচি পালন করবে সেটি কেন্দ্রীয়ভাবে চূড়ান্ত করা হবে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, ডিসেম্বর মাসে রাজপথ কারো হাতে তুলে দেওয়া হবে না এবং বিএনপি যেন ১০ ডিসেম্বর কোন রকম বাড়াবাড়ি, নাশকতা এবং জনগণের বিঘ্নতা সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সব সময় সরব থাকবে।

সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের নেতাদেরকে ঢাকা সুরক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং এই সুরক্ষা সবচেয়ে বড় দিক হলো রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যে থাকা। আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, যত বেশি রাজনৈতিক কর্মসূচি হবে তত বেশি কোণঠাসা হবে বিএনপি এবং জামায়াত। আওয়ামী লীগের ওই নেতা বলেন, ডিসেম্বর এমনি বিজয়ের মাস। বিজয়ের মাসে আওয়ামী লীগের নানারকম কর্মসূচি থাকে। এবার কর্মসূচিগুলোর অবয়ব এবং আকার বড় করা হবে, যেন প্রতিটি কর্মসূচি দৃশ্যমান হয় এবং জনগণকে সম্পৃক্ত করা যায়। আর এই সমস্ত কর্মসূচির মাধ্যমে ১০ ডিসেম্বর বিএনপির নাশকতা এবং ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে বলে আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন। তবে ১০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ কোনো কর্মসূচি পালন করবে কিনা, ওই দিনটি ছেড়ে দিবে এই ব্যাপারে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের মধ্যে দুই ধরনের মতামত রয়েছে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই মনে করছেন, ১০ ডিসেম্বর কিছু না কিছু হলেও কর্মসূচি পালন করা উচিত। কারণ ওইদিন যদি কোনো কর্মসূচি পালন না করা হয়, তাহলে বিএনপি রাজপথ দখল করার কিছু একটা সুযোগ খুঁজবে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা বলছেন যে, ১০ ডিসেম্বরের আসলে কোনো কর্মসূচি পালন করা উচিত না। কারণ এ ধরনের কর্মসূচি হলে বিএনপি একটি সহিংসতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে এবং ২০০৬ এর ২৮ অক্টোবরের মত কিছু লাশ ফেলে একটা দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করবে। শেষ পর্যন্ত ১০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ কি করবে সে সম্পর্কে জানা যাবে আরও পরে। তবে ১০ ডিসেম্বর কিছু করুক না করুক ৯ ডিসেম্বর, ১১ ডিসেম্বর এবং পুরো ডিসেম্বর মাসজুড়ে যে আওয়ামী লীগ রাজপথে থাকবে এটি মোটামুটি নিশ্চিত।