প্রধানমন্ত্রী বলেছেন গ্রেনেড-গুলি-বোমা মোকাবেলা করে এ পর্যন্ত এসেছি 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন গ্রেনেড-গুলি-বোমা মোকাবেলা করে এ পর্যন্ত এসেছি 

 রযেল ভিউ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের সামনে দিকে এগিয়ে যেতে হবে। নির্বাচন নিয়ে আমাদের চিন্তা নেই। জনগণের ভোট আমাদের আছে। তবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কিছু চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র সব সময় থাকে।

ওটা ভয় পাই না। গ্রেনেড, গুলি, বোমা, সেই বিশাল সাইজের বোমা, সবই তো মোকাবেলা করে এই পর্যন্ত চলে এসেছি। আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ মানুষকে কাজ দেন, সেই কাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহই তাকে রক্ষা করেন। ওপরে আল্লাহ, নিচে আমার দলের লোক আছে।

যখনই জীবনে আঘাত এসেছে আমার দলের মানুষই আমাকে মানব ঢাল রচনা করে নিজেদের জীবন দিয়ে রক্ষা করেছে। কাজেই দেশের মানুষের জন্য কাজ করার যে সুযোগ পেয়েছি সেটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া।
আজ বুধবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গোপালগঞ্জ, কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই আঘাত এসেছে আমার দলের মানুষই আমাকে মানব ঢাল রচনা করে নিজেদের জীবন দিয়ে রক্ষা করেছে।

মুদ্রাস্ফীতি, অর্থনৈতিক মন্দা আমরা তার থেকে দূরে না, আমাদের ওপরও ধাক্কা আসে। সব জিনিস তো আমরা করতে পারি না। সেজন্য আমি সকলকে আহ্বান করেছিলাম, নিজেও শুর করেছি কখনো এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না। যে যা কিছু পারেন উৎপাদন করবেন। আমাদের খাদ্য উৎপাদন আমরা নিজেরা করব।

ফসল চাষ, তরিতরকারী, পাট, ধান যা কিছু পারা যায়, মাছ-মুরগি, গরু, ছাগল, ভেড়া যে যা পারেন পালন করবেন। বিভিন্নভাবে উৎপাদনমুখী হতে হবে সবাইকে।
জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বে জিনিসের দাম, খাবার জিনিসের দাম অতিরিক্ত বেশি। ইতিমধ্যে আপনারা জানেন সাউথ আফ্রিকা, আমেরিকা, লন্ডনসহ বিভিন্ন জায়গায় আমরা ঘুরেছি। দেখেছি সেখানে জিনিসের দাম কত বেশি। আমাদের মানুষ অত্যন্ত দক্ষ। আমরা যদি চেষ্টা করি, আমাদের খাদ্য আমরা উৎপাদন করি তাহলে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও দিতে পারি, ইতিমধ্যে বিদেশেও যাচ্ছে।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, খাদ্যগুলি সংরক্ষণ করা, অথবা সেগুলিকে বিকল্পভাবে কিভাবে সংরক্ষণ করতে পারি সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা, হিমাগার তৈরি করা, ফসলগুলি রাখা সেই চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি। সেভাবেই দেশের উন্নয়নে আমরা নিশ্চিয়তা দিচ্ছি। শিক্ষা, দীক্ষা, লেখাপড়া সব দিকে ব্যবস্থা নিচ্ছি। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ওষুধ দিচ্ছি। মানুষের কল্যাণে যা যা করার আমরা করে যাচ্ছি।

কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়াবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, অমি কৃতজ্ঞাতা জানাই প্রথমে আমার কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়াবাসীর কাছে। সেখান থেকে আমি বারবার নির্বাচিত হই। সব এমপিরা ছোটে তাদের এলাকার জন্য, আর আমাকে দেখতে হয় তিন শ এলাকা, ১৭ কোটি মানুষকে। আমার সৌভাগ্য এটাই কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়াবাসী আমাকে দেখে। আমার জন্য কাজ করে এবং আমাকে দুঃচিন্তা থেকে মুক্ত দেয়। যে কারণে আমি একেবারে নিবেদিত প্রাণ হয়ে দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পারি। কাজের আমার দায়িত্বটা তো আপনাদেরই হাতে, আপনারই নিয়েছেন, সেটাই তো আমার সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য।

সরকার প্রধান আরো বলেন, আমার মা নেই, বাবা নেই, ভাই নেই, কেউ নেই। আমি পেয়েছে বিশাল আওয়ামী লীগ সংগঠন। সবচেয়ে বড় কথা আমার টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়ার মানুষ সেই সাথে সাথে পেয়েছি সারা বাংলাদেশের মানুষ। এরাই আমার পরিবার, এরাই আমার আপনজন। কাজেই আপনজন পাশে না থাকলে কোনো কাজে সফলতা অর্জন করা যায় না। আজকে যতটুকু সাফল্য অর্জন করেছি তার অবদানটুকু টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়াবাসীর যারা আমাকে সব সময় পাশে থেকে সমর্থন দেন, আপনাদেরই দান। কাজেই সেই কৃতজ্ঞতা সবার কাছে জানাচ্ছি। ভবিষ্যতে আবার আসব, প্রত্যেকবাই এই অফিসে আসব।

এর আগে বেলা এগারোটার দিকে টুঙ্গিপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে পায়ে হেটে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যলয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে পৌঁছানোর পর স্থানীয় নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নেন।