বন্যায় জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন: ১০ কোটি টাকার ক্ষতি

বন্যায় জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন: ১০ কোটি টাকার ক্ষতি
ফাইল ছবি

সুনামগঞ্জসংবাদদাতা : সম্প্রতি ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়ী ঢল ও টানা ভারী বর্ষণে আকস্মিকভাবে প্লাবিত করেছে সিলেট-সুনামগঞ্জ জেলার অর্ধ কোটি মানুষের বসতি। প্লাবনে ভেসে গেছে স্থায়ী অস্থায়ী সম্পদ ও স্থাপনা। বন্যার্তদের আর্তনাদ দুই জেলার আকাশ-বাতাস করেছে ভারী। বন্যার্তদের জীবন-জীবিকা যতটুকু বির্পযয় হয়েছে তার চেয়েও জেলা উপজেলার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা করেছে বিপর্যস্ত। যাত্রীদের হচ্ছে অন্তহীন ভোগান্তি।

সুনামগঞ্জ জেলার বন্যা কবলিত উপজেলা জামালগঞ্জ। ৩৩৮.৭৪ বর্গ কি.মি. আয়তনে ৬টি ইউনিয়নে বাস করেন সোয়া ২ লাখ মানুষ। দ্বিতল ভবনে বসবাসরত আর গ্রামীণ কিছু উঁচু বাড়ী বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া সবাই বানভাসী দুর্গত অসহায় সদস্য। নৌকা ছাড়া যে কোন আশ্রয় কেন্দ্রের যোগাযোগ হয়েছে বিচ্ছিন্ন।

জেলার সাথে জামালগঞ্জ উপজেলার পাকা সড়ক পথে বন্যায় ভেঙ্গে হয়েছে বড় বড় গর্ত ও ভাঙ্গা বা ক্লোজার সুরমার কড়াল স্রোত তীব্র আকার ধারণ করে জামালগঞ্জ থেকে-সেলিমগঞ্জ ১৩ কি.মি. মেইন রোড ভেঙ্গে ১২টি খাল, গর্ত বা ভাঙ্গা সৃষ্টি হয়েছে। এই রোডের নয়াহালট ভাঙ্গাঁর স্রোতে পড়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও চাঁনপুর হারুন মার্কেটের পাশে রাস্তায় গভীর গর্তসহ বিছিন্নভাবে আরো ৭টি ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা হয়েছে সম্পূর্ণ বিছিন্ন হয়ে পড়ে।

জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জ রোডে প্রথমেই বসুন্ধরা থেকে শাহপুর বাঁধ পর্যন্ত ৬টি বৃহৎ ভাঙ্গণের সৃষ্টি হয়েছে। শাহপুর থেকে নয়াগাঁও এর মধ্যবর্তী উজ্জলপুর-ইসলাপুরের পাশে বাইপাস রাস্তায় নতুন বাঁধের উভয় পাশে ২টি বৃহৎ ভাঙ্গঁনসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নতুন-পুরাতন ২টি বাধেঁ ১টি ভাঙ্গণ সৃষ্টি হওয়ায় জনজীবন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার হয়েছে করুণ চিত্র। এ ছাড়াও জাল্লাবাজ ব্রীজের উভয় পাশে ভেঙ্গেঁ গিয়ে নয়াগাঁও- জামালগঞ্জ দুটি দুর্গম এলাকায় পরিণত হয়েছে।

উপজেলার সুরমার পূর্বাংশের বাণিজ্য কেন্দ্র সাচনা বাজার-সুনামগঞ্জ রাস্তায়ও বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকটি স্থানে। যার ফলে সড়ক যোগাযোগ রয়েছে বিছিন্ন। নৌ-ফেরীতে ও মোটর বাইক বা সিএনজি অধিক ভাড়ায় যাতায়াতের প্রক্রিয়া চলছে। এতে অধিক অর্থ ব্যয়ে অতিরিক্ত সময়ে ও জেলায় বিভিন্ন কার্যক্রমে বা আদালতে সঠিক সময়ে হাজির হতে পারছেন না উপকারভোগীরা। এতে করে দুভোর্গ বাড়ছেই এখানকার বাসিন্দাদের। জামালগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জ যাতায়াতের জন্য এখন পূর্বের আমলের নৌকা বা লঞ্চ ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই। জামালগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জ যেতে ৪ ঘন্টা সময় ব্যয় হয় সুরমার প্রবাহমান বন্যার স্রোতের কারণে। জনগণের এই দুর্ভোগ লাঘবে সড়ক ও জনপদ এবং এলজিইডিসহ এডিপি অর্থ দিয়ে এখন থেকে পরিকল্পনা করে প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে জামালগঞ্জের সচেতন নাগরিকের রয়েছে আকুল আবেদন ও দাবী।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুল মালেক বলেন, আমি নতুন এসেছি। আমার স্টাফ নিয়ে পরিদর্শন করেছি, বন্যায় ভাঙ্গন সৃষ্টি করে প্রায় ১০ কোটি টাকার রাস্তা-ঘাটের ক্ষতি হয়েছে।  অচিরেই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ পাঠাব।