সিলেট বন্যা: ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ৫৫

সিলেট বন্যা: ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ৫৫
ফাইল ছবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিলেট ও সুনামগঞ্জের আবহাওয়া অনুকূল থাকলেও সুরমা ও কুশিয়ারার পানি চারটি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি হ্রাসের গতি ধীর হওয়ায় দুর্ভোগও লম্বা হচ্ছে। সেই সাথে পানিবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। 

সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে ডায়রিয়াসহ অন্যান্য পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫৮ জন। এর মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৮৭ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সিলেটে ৩৪, সুনামগঞ্জে ১৪১, হবিগঞ্জে ৬৮ ও মৌলভীবাজারে ৪৪ জন রয়েছেন। তাছাড়া, চর্ম রোগে আক্রান্ত হওয়া ১২৩ জন। সবমিলিয়ে সিলেট বিভাগে পানিবাহিত রোগে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৮৩১ জন। বন্যার পানিতে ডুবে সিলেট বিভাগে এ পর্যন্ত ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সিলেটে ১৮, সুনামগঞ্জে ২৮, মৌলভীবাজারে ৫ এবং হবিগঞ্জে ৫ জন রয়েছেন। 

এদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবো সিলেটের তথ্য অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর চারটি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর মধ্যে কানাইঘাটে সুরমা বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার, আমলসীদে কুশিয়ারা বিপদসীমার ৭৬ সেন্টিমিটার, শেওলায় কুশিয়ারা ১৩ সেন্টিমিটার এবং ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা ৯৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে, সিলেটে সুরমা বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

দক্ষিণ সুরমা : দক্ষিণ সুরমা প্রতিনিধি জানান, দীর্ঘ বন্যার পর কাঠফাটা রোদ উঠলেও ধীরগতিতে নামছে পানি। উপজেলার প্রায় ৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রে এখনও বন্যার্তরা রয়েছেন। বন্যায় বিভিন্ন স্থানে রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের অনেক রাস্তাঘাট ও বাড়ি ঘর এখনও পানির নীচে রয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় রাস্তাঘাটে জমে থাকা ময়লা পানি ও আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। 

জকিগঞ্জ : জকিগঞ্জ (সিলেট) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, জকিগঞ্জে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি এখনও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগের ভাঙন দিয়ে গতকাল মঙ্গলবারও পানি লোকালয়ে ঢোকার খবর পাওয়া গেছে। 

এদিকে, গত মাসের বন্যার পানি এখনও পুরোপুরি নামেনি। নিম্নাঞ্চলের অনেক গ্রাম এখনো প্লাবিত। এর মধ্যে নদীর পানি ফের বাড়তে থাকায় উপজেলার প্রতিটি এলাকায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। পানি আতঙ্কে কৃষিক্ষেত নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। গত মাসে বন্যার পানি নামার পর কৃষি জমিতে আমন ধানের বীজ বোপণ করা হয়েছিলো। কিন্তু নতুন করে বন্যার পানি আসায় তাও তলিয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে।

সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি জানান, জেলায় বন্যার পানি নামলেও হাওরগুলোতে পানি থৈ থৈ করছে। বানের পানিতে কাচা বাড়ি ঘর বিধ্বস্ত হওয়ায় লোকজন বিপাকে পড়েছেন। বন্যা পরবর্তী রোগ বালাইর পাশাপাশি গো খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বন্যার্তদের ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।