সিন্ডিকেটের কারসাজি : অ্যামোনিয়া গ্যাস সিলিন্ডারে ইচ্ছে মতো দাম হাঁকাচ্ছেন দোকানীরা

সিন্ডিকেটের কারসাজি : অ্যামোনিয়া গ্যাস সিলিন্ডারে ইচ্ছে মতো দাম হাঁকাচ্ছেন দোকানীরা

সুনীল সিংহ
সিন্ডিকেটের কারসাজিতে দেশে অ্যামোনিয়া গ্যাস সিলিন্ডার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ৫০ কেজি ওজনের একটি সিলিন্ডারের নির্ধারিত মূল্য ২১০০ টাকা হলেও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাত বদল হয়ে এসব সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ হাজার টাকা দরে। 

জানা গেছে, ফেঞ্চুগঞ্জস্থ শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডে (এসএফসিএল) উৎপাদিত হয় এই অ্যামোনিয়া গ্যাস। আর এই গ্যাস ব্যবহার করা হয় দেশের হিমাগারগুলোতে। বিশেষ করে আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগারগুলোতে এই গ্যাস ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া, চিংড়ি প্রসেসিং শিল্পেও এ গ্যাস ব্যবহৃত হয়।

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, দেশের হিমাগারগুলোতে বছরে ৩ থেকে ৪ হাজার সিলিন্ডার অ্যামোনিয়া গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। চিংড়ি প্রসেসিং শিল্পেও এ গ্যাস ব্যবহৃত হয়। অ্যামোনিয়া গ্যাস ছাড়া কোল্ড স্টোরেজ, মাছ প্রসেসিং কোম্পানি ও বরফকলগুলো প্রায় অচল। আর এ সুযোগটি নিয়ে একটি অসাধু গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটর সিন্ডিকেট গ্যাসের দাম কয়েকগুণ বাড়িয়েছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, অ্যামোনিয়া গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বাড়ার ফলে হিমায়িত আলুসহ ফলমূলের দর বেড়ে যায়। আর তা বেশি দরে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ক্রেতারা। অ্যামোনিয়া গ্যাস নির্ধারিত দরে বিক্রি হলে সাধারণ ক্রেতারা এর সুফল ভোগ করবে বলে জানান তারা। 

একাধিক সূত্র জানায়, ফেঞ্চুগঞ্জের বাসিন্দা মো. নুরুল হোসেন খোকন এ সিন্ডিকেটের মূল হোতা । তার মালিকানাধীন মেসার্স পলাশী এন্টারপ্রাইজ হলো অ্যামোনিয়া গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এ মামলা রেকর্ড (এফআইআর দুদক মামলা ৬/২০২১, ৭/২০২১, ৮/২০২১ সিলেট) আছে। মামলা থাকার পরেও তিনি বর্তমানে আমেরিকায় অবস্থান করছেন।

নুরুলের অন্য সহযোগীরা হচ্ছেন-দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশীদ চত্বরের বাসিন্দা কামাল আহমেদ (০১৭১১-৩৫৩০১৪), জামালপুরের মিজানুর রহমান (০১৭৬১-৮৫৭১৭৬) ও রিপন (০১৯৩৬-৭৪২১০৩), ঢাকার নাসির (০১৭১২-১১৩১৬৭), রাজ্জাক ও সিয়াম জাহাঙ্গীর।  

এ ব্যাপারে জামালপুরের মিজানুর রহমানের সাথে ফোনে যোগাযোগ হলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, ‘অ্যামোনিয়া গ্যাসের ৫০ কেজি একটি সিলিন্ডারের মূল্যের সাথে জামালপুরে নিয়ে আসতে এবং সিলেটে নিয়ে যেতে যা খরচ আসে তা যোগ করে ৫’শ টাকা লাভে তারা প্রতিটি সিলিন্ডার বিক্রি করেন।’ কয়েকগুণ বেশি দরে বিক্রির বিষয়টি তিনি গুজব বলে উড়িয়ে দেন।
এ ব্যাপারে কামাল আহমদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।