মৌলভীবাজার জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে সার্ভার সমস্যা ॥ ভোগান্তিতে বিদেশগামীরা

মৌলভীবাজার জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে সার্ভার সমস্যা ॥ ভোগান্তিতে বিদেশগামীরা

মৌলভীবাজার থেকে হোসাইন আহমদ ঃ সার্ভার সমস্যায় সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার বিদেশগামীরা। গত ১ মাস যাবৎ প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সার্ভারে সমস্যা থাকায় ফিঙ্গার দিতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।  এর মধ্যে কারো কারো ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে যাচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেককেই ঢাকায় গিয়ে ফিঙ্গার দিতে হচ্ছে। 

কর্তৃপক্ষ বলছে, সার্ভার ডাউন থাকায় প্রতিদিন যে পরিমাণ ফিঙ্গার প্রিন্ট করার কথা তার এক তৃতীয়াংশ করা যাচ্ছে না। আবার প্রায় দিন সার্ভার পুরো সময় বন্ধ থাকে।

জানা যায়, সরকারিভাবে নিবন্ধিত হয়ে বিদেশ যেতে হলে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে নিবন্ধন করতে হয়। এজন্য বিদেশগামীদের সেখানে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে হয়। মৌলভীবাজার জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস থেকে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের বিদেশগামীরা ফিঙ্গার দিয়ে থাকেন।   

মৌলভীবাজার কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস জানায়, গত ৪ জুন থেকে সার্ভারে সমস্যা হচ্ছে। মাঝে মধ্যে আসে আবার চলে যায়। কেউ কেউ ৪/৫ দিন এসেও ফিঙ্গার দিতে পারছেন না। স্বাভাবিক থাকাবস্থায় প্রতিদিন গড়ে ১৫০/২০০ বিদেশগামী ফিঙ্গার দিতে পারতেন। কিন্তু এখন প্রতিদিন ৪০০/৫০০ লোক এসে ফেরত যাচ্ছে। কিন্তু এমআরপি পাসপোর্টের ডাটা করা যাচ্ছে না। যার কারণে এমআরপি পাসপোর্টধারীদের ফিঙ্গার কোনো অবস্থাতে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস ঘুরে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে আসা বিদেশগামীদের ভোগান্তির চিত্র প্রত্যক্ষ করা গেছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় তিনশ’র মতো বিদেশগামী ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে আসেন। তাদের বেশিরভাগ সকাল ৮টা থেকে অপেক্ষা করছেন ফিঙ্গার প্রিন্ট দেয়ার জন্য। কিন্তু বিকেল ৪টা পর্যন্ত একজন যাত্রীও ফিঙ্গার দিতে পারেননি। তাদের সবাইকে পরদিন আবার আসতে বলে বিদায় করে দেয়া হয়। ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে না পেরে অনেক বিদেশগামী বিরক্ত হয়ে ফিরে যান। আবার কেউ কেউ চেষ্টা করতে থাকেন; যদি কোনো উপায়ে কাজটা করিয়ে নেয়া যায়। এতে তাদের টাকা, সময় ও শ্রম দিতে হচ্ছে।

ফিঙ্গার দিতে আসা হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার হোসেন আলী জানান, মঙ্গলবার পর্যন্ত ৪ দিন এসেছি। কিন্তু সার্ভার ডাউন থাকায় ফিঙ্গার দিতে পারছি না। একাধিকবার আসায় আমার কয়েক গুণ টাকা বেশি খরচ হয়েছে। 
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার বাসিন্দা শাহিন হোসেন জানান, এ নিয়ে ৩দিন এসেছি। সার্ভার ডাউন থাকায় ফিঙ্গার দিতে পারছি না। 
হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার মো. রমিজ আলী জানান, ভাতিজার ফিঙ্গার দেয়ার জন্য ২ দিন নিয়ে এসেছি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলে সার্ভারে সমস্যা। যার কারণে ফিঙ্গার দিতে পারছি না। 
শ্রীমঙ্গল উপজেলার আব্দুল জব্বার ও কমলগঞ্জ উপজেলার দিপন অলমিক সহ প্রায় ৫০ জন বিদেশগামী সার্ভারের সমস্যার কথা উল্লেখ করেন প্রতিবেদকের কাছে।
মৌলভীবাজার জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন জানান, সার্ভার সমস্যার কথা আমাদের ডেমো ফোরামে নিয়মিত বলছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছেন। আবার দেখা গেছে যখন সার্ভার থাকে এই দিন আমরা রাত ৯/১০ টা পর্যন্ত কাজ করি। বিদেশগামীদের মধ্যে যাদের বেশি জরুরি তাদেরকে আমরা ঢাকায় পাঠিয়ে দেই। জনবল সংকটের কথাও বলেন তিনি।