এ অঞ্চলে করোনা পরীক্ষায় অনীহা বেশি ॥ স্বাস্থ্য বিভাগ

শীত বাড়ার সাথে সাথে সিলেটে বেড়ে গেছে সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা

শীত বাড়ার সাথে সাথে সিলেটে বেড়ে গেছে সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা

আহমাদ সেলিম

শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে সিলেটে বেড়ে গেছে সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা। প্রায় ঘরে ঘরেই এখন এ ধরনের রোগী। টানা জ্বর-সর্দিসহ আরো কিছু ঠান্ডাজনিত উপসর্গ নিয়ে কয়েকদিন ভোগান্তি পোহালেও করোনা পরীক্ষায় তেমন আগ্রহ নেই অনেকের। শীত এবং করোনা মহামারির এই সময়ে যে কারণেই সর্দি-কাশি-জ্বর দেখা দিক না কেন, অবহেলা না করে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। আর যারা বয়স্ক, যাদের কিডনী, ডায়াবেটিক সমস্যা রয়েছে-তাদেরকে করোনা পরীক্ষার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া বেশি দরকার বলে মনে করছেন তারা।
একদিকে শীতের তীব্রতা অন্যদিকে করোনার ঊর্ধ্বগতি; এমন সময় ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বড়দের পাশাপাশি ছোটশিশুরা জ্বর সর্দিতে ভুগছে। পরিবারের একজন থেকে শুরু হলেও সহজে ছেড়ে যাচ্ছে না কাউকে। পর পর সবাইকে ভুগিয়ে যাচ্ছে উপসর্গগুলো। এতে করে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিশু এবং বয়স্কদের।
ওসমানী হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. মোখলেছুর রহমান জানান, ‘গ্রাম এবং শহরে চিত্র একই। ঘরে ঘরে কেউ না কেউ জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত। এই উপসর্গগুলোকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। চিকিৎসকের কাছে গেলে হয়তো সামান্য ওষুধে সুস্থ হয়ে উঠবেন। কিন্তু অনেকে সেটি করছেন না। তারা করোনার ভয়ে ফার্মেসী থেকে ওষুধ কিনে সেবন করছেন। অনেকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিয়মিত এন্টিবায়েটিক ওষুধও কিনছেন। এতে ঝুঁকি অনেকটাই থেকেই যায়।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটে সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক অনেক বেড়েছে। শুধু ওসমানী হাসপাতালের বহির্বিভাগে এখন প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চারশতাধিক রোগী আসছেন। এসব রোগীর মধ্যে প্রায় সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্ত।
ডায়াবেটিক ও মেডিসিন চিকিৎসক তায়েফ আহমেদ চৌধুরী জানান, ‘জ্বর সর্দি কিংবা অন্য উপসর্গ দেখা দিলেও চিকিৎসকের পরামর্শে সামান্য ওষুধে ভালো হয়ে যাচ্ছেন তারা। কিন্তু অনেকে সেটি করছেন না। তারা করোনার ভয়ে ফার্মেসিতে গিয়ে উপসর্গের কথা বলে অ্যান্টিবায়োটিক, প্যারাসিটামলসহ আরও কয়েকটি ওষুধ কিনে খাচ্ছেন। তিনি বলেন, জ্বর সর্দি ডায়াবেটিক সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন রোগী আসছেন। দেখা যাচ্ছে, তাদের অধিকাংশই টিকা নেননি। হোম কোয়ারেন্টিন ও লকডাউন পরিস্থিতি এড়াতে করোনার পরীক্ষা করতে চান না অনেকে। এতে করোনা সংক্রমণ বহুগুণে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চাকুরিজীবী জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে তিনিসহ পরিবারের সবাই জ্বর সর্দি কাশিতে ভুগছেন। কিন্তু সহজে যাচ্ছে না। ফার্মেসি থেকে কয়েক দফায় ওষুধ খাওয়ার পর জ্বর কমলেও কার্শি আর সর্দি কমছে না। একইভাবে শহরের একজন ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, পনেরদিন থেকে কাশি যাচ্ছে না। বিড়ম্বনার ভয়ে করোনা পরীক্ষাও করাতে পারছি না।
যোগাযোগ করা হলে সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, সিলেটে করোনা পরীক্ষায় মানুষের অনীহা বেশি। যে কারণে পরিবারের একজনের সর্দি জ্বর কিংবা কাশি হলে পুরো পরিবারকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।