শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির বেহাল দশা!

শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির বেহাল দশা!

শায়েস্তাগঞ্জ সংবাদদাতা :: হবিগঞ্জ জেলার একমাত্র রেলওয়ে জংশন শায়েস্তাগঞ্জ। এ স্টেশনের সমস্ত স্থাপনা ব্রিটিশ আমলে নির্মাণ করা। তবে, গত ২০০৪ সালে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে শায়েস্তাগঞ্জ রেল স্টেশনের আধুনিকায়নের কাজ সম্পন্ন করা হলেও অজ্ঞাত কারণে এই পুলিশ ফাঁড়িটির সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ হয়নি। শায়েস্তাগঞ্জ রেল স্টেশনের নিরাপত্তার জন্য স্থাপিত পুলিশ ফাঁড়িটি ব্যবহারের অযোগ্য ও জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। 

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন পুলিশ ফাঁড়ি ভবনটি এতটাই জরাজীর্ণ, যেকোনো সময় ছাদের পলেস্তেরা ধসে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ ভবনটিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন ১১ জন পুলিশ সদস্য।

ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এ ভবনটি সংস্কারে কর্তৃপক্ষের নজর না থাকায় দিনদিন আরও ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, যেকোনো সময় ভবনটি ধসে পড়ে ঘটতে পারে প্রাণহানি।

ওই ভবনে কর্মরত পুলিশ সদস্য ইনচার্জ মোঃ হারুনুর রশিদ (এসআই) জানান, উনাদের কর্মস্থল হিসেবে ব্যবহৃত পুলিশ ফাঁড়ি ভবনে এস আই ১জন, এ এস আই ২ জন এটিএসআই ১ জন পুলিশ কনষ্টেবল ৭ জনসহ মোট ১১ জন সদস্য কর্মরত আছেন। এ ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে কর্মরত সদস্যরা স্টেশনের পরিত্যক্ত যাত্রী বিশ্রামাগারে রাত্রিযাপন করেন। এছাড়া, এ পুলিশ ফাঁড়িটিতে নেই কোনো শৌচাগার। স্টেশনের যাত্রী বিশ্রামাগারের টয়লেট ব্যবহার করেন পুলিশ সদস্যরা। খাবার পানির চাহিদা পূরণ করা হয় আশপাশের এলাকা থেকে পানি এনে। গোসল সারতে হয় পার্শ্ববর্তী দিঘিতে গিয়ে। 

শতবর্ষী এ ভবনটির পেছন দিকের অবস্থা আরও মারাত্মক। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সেখানে দীর্ঘদিন পানি জমে থাকে। এতে পানি মিশ্রিত বর্জ্য পচে গলে দুর্গন্ধ ছড়ানোর পাশাপাশি রোগ জীবাণুর জন্ম হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যা আশপাশের এলাকার জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।

গত ২০০৪ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত স্টেশন সংস্কার করতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় কর হচ্ছে। এসময়ের মধ্যে শায়েস্তাগঞ্জ রেল স্টেশনের আধুনিকায়নের কাজ সম্পন্ন হলেও অজ্ঞাত কারণে এই পুলিশ ফাঁড়িটির সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ হয়নি।

এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত (ইনচার্জ) এসআই মো. হারুন অর রশিদ বলেন, পুলিশ ফাঁড়িটির ছাদের বিভিন্ন স্থানে ফাটলের কারণে ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ে। এতে অফিসে আসবাবপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অফিসের জরাজীর্ণ দরজা জানালা এমনভাবে ভাংগা যে, এগুলো আর ব্যবহার করার উপযুক্ত নয়। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা যাত্রী সাধারণের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকলেও তাদের কোনো নিরাপত্তা নাই।

তিনি জানান, এই পুলিশ ফাঁড়িতে আমরা ১১ জন পুলিশ সদস্য কর্মরত আছেন। এখানে বিশ্রাম বা থাকার কোনো ব্যবস্থা নাই, টয়লেটও নাই, ওযু-গোসল ও খাবার পানির ব্যবস্থা না থাকায় আশপাশের টিউবঅয়েল থেকে পানি আনতে হয় বিষয়টি ঊদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন পুলিশ ফাঁড়ির জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন পুননির্মাণ বা সংস্কার বিষয়ে একাধিকবার স্থানীয় এবং জাতীয় পত্রিকায় লেখালেখি হলেও কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা সংশ্লিষ্টদের হতাশ করেছে।